◙ জাতির জনক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
১৯২০
সালে গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন, তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম
সায়রা বেগম। কিশোর বয়স
থেকেই অবিভক্ত বাংলার রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন পরবর্তীতে দেশ ভাগের পর থেকে
পূর্ব পাকিস্তানের মুলধারার রাজনীতি দিয়ে তা অব্যাহত থাকে বাংলাদেশের জন্ম এবং
তাঁর জীবনের শেষ অবধি পর্যন্ত। ১৮ বছর বয়েসে বিয়ে করেন বেগম ফজিলাতুন্নেসাকে।
তাদের সংসারে ২ মেয়ে- শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা এবং ৩ ছেলে- শেখ কামাল, শেখ জামাল ও
শেখ রাসেল। ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট, কতিপয় সেনাবাহিনীর অফিসার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে
তাঁকেসহ পরিবার ও পরিবারের বাইরের মোট ১৬ জনকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে তাঁর
জীবন অবসান হয়।
◙ বঙ্গবন্ধু
ও সমসাময়িক রাজনৈতিক ইতিবৃত্ত
১৯২০
- ১৭ই মার্চ, গোপালগঞ্জ জেলার বাইগার নদীর তীরে টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। তিনি ছয় ভাইবোনদের মধ্যে তৃতীয়।
১৯২৭
- সাত বছর বয়সে গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বঙ্গবন্ধুর ছাত্র জীবন শুরু হয়।
১৯২৯
- বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জ সীতানাথ একাডেমীতে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন।
১৯৩৪
- মাদারীপুর ইসলামিয়া হাইস্কুলে পড়ার সময় বঙ্গবন্ধু বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়াশোনা বন্ধ করে দেন।
১৯৩৭
- বঙ্গবন্ধু সপ্তম শ্রেণীতে আবার পড়াশোনা শুরু করেন।
- অবিভক্ত বাংলায় প্রথম প্রাদেশিক নির্বাচন হয়, এই নির্বাচনে মুসলিম লীগ এবং ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টি মিলে ‘হক মন্ত্রীসভা’ গঠন করে।
১৯৩৮
- ১৬ জানুয়ারি, বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল পরিদর্শন এলে বঙ্গবন্ধুর সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয়।
- মাত্র ১৮ বছর বয়সে বেগম ফজিলাতুন্নেসাকে বিবাহ করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
১৯৩৯
- সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে স্কুল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ সভা করার কারণে বঙ্গবন্ধু সর্বপ্রথম কারাবরণ করেন।
১৯৪০
- ২৩ মার্চ, লাহোরে শেরে বাংলা ফজলুল হক ঐতিহাসিক ‘লাহোর প্রস্তাব’ উত্থাপন করেন।
১৯৪১
- ফজলুল হকের সাথে জিন্নাহর সাথে মতানৈক্য হলে তিনি দ্বিতীয়বারের মত শ্যামা প্রাসাদের সাথে ‘শ্যামা-হক মন্ত্রীসভা’ গঠন করেন।
১৯৪২
- বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জ মিশন স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষায়(প্রবেশিকা)উত্তীর্ণ হন।
- এই বছরই বঙ্গবন্ধু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। তিনি এই কলেজের বেকার হোস্টেলের ২৪ নং কক্ষে থাকতেন।
১৯৪৩
- ১৯৪৩ সালে বাংলায় এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়, এই দুর্ভিক্ষ ‘পঞ্চাশের মন্বন্তর’( বাংলা সন ১৩৫০) নামে পরিচিত।
১৯৪৪
- কুষ্টিয়ায় নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগের সম্মেলনে যোগদান করে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু রাজনীতিতে অভিষিক্ত হন এবং সেদিনই ফরিদপুর ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশনের সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন।
১৯৪৬
- বঙ্গবন্ধু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এ সময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সহকারী নিযুক্ত হন।
- ২৪ এপ্রিল, শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ও আবুল হাসেমের নেতৃত্বধীন মুসলিম লীগ প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হন এবং মন্ত্রীসভা গঠন করেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলেন অবিভক্ত বাংলার শেষ মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, অবিভক্ত বাংলার শেষ গভর্নর ছিলেন ‘স্যার ফ্রেডরিক জন বারোজ’।
১৯৪৭
- ১৪ অগাস্ট, ভারতবর্ষের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন করাচিতে পাকিস্তান গণপরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এ সময় পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল হন ‘মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’, প্রধানমন্ত্রী হন ‘লিয়াকত আলী খান’ ও পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হন ‘খাজা নাজিমুদ্দিন’।
- ১৫ অগাস্ট, ভারতীয় গণপরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
- ১ সেপ্টেম্বর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেম ‘তমুদ্দন মজলিশ’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংঘটন গঠিত হয়, এই সংগঠন থেকে সর্বপ্রথম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে চালু করার দাবি জানায়।
- বঙ্গবন্ধু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন।
১৯৪৮
- বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন।
- ৪ জানুয়ারী, বঙ্গবন্ধু ফজলুল হক হলের এসেম্বলি হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ) প্রতিষ্ঠা করেন।
- ফেব্রুয়ারি, পাকিস্তানের প্রথম গণপরিষদ অধিবেশনে পূর্ববাংলার গণপরিষদের সদস্য কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, গণপরিষদে বাংলাকে অন্যতম ভাষা হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি দিতে দাবি জানান।
- ২ মার্চ, কামরুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্র ভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন।
- ১১ মার্চ, রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবীতে সাধারণ ধর্মঘট চলাকালে বঙ্গবন্ধুসহ অনেক ছাত্র নেতা গ্রেফতার হন (এজন্য ১৯৪৮-৫২ এই দিনে ভাষা দিবস হিসেবে পালিত হত) ।
- ২১ মার্চ, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ রেসকোর্সে বলেন, ‘উর্দু এবং একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’।
- ২৪ মার্চ, কার্জন হলে জিন্নাহ একই কথা পুনরাবৃত্তি করেন।
- ১৫ মার্চ, বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পান।
- ১১ সেপ্টেম্বর, ফরিদপুরে কর্ডন প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করার সময় বঙ্গবন্ধু আবারও গ্রেফতার হন।
১৯৪৯
- ২১ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে মুক্তি পান।
- ২৯ মার্চ, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের দাবী আদায়ের আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষ বঙ্গবন্ধুকে অযৌক্তিকভাবে জরিমানা করে।
- ২০ এপ্রিল, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অযৌক্তিক জরিমানার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
- ২৩ জুন, ঢাকার টিকাটুলির রোজ গার্ডেন প্যালেসে মাওলানা ভাসানিকে ‘সভাপতি’, শামসুল হককে ‘সাধারণ সম্পাদক’ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ‘যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক’ করে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়।
- ২৭ জুলাই, জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু সরাসরি মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন।
১৯৫০
- ১ জানুয়ারী, খাদ্যের দাবীতে আন্দোলন করার কারণে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়।
- লিয়াকত আলী খানও বলেন ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’।
১৯৫২
- ২৬ জানুয়ারি, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন একই কথা বলেন, ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’। এ সময় পাকিস্তানের গবর্নর জেনারেল ছিলেন ‘মালিক গোলাম মোহাম্মদ’, পূর্ববাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ‘নুরুল আমিন’।
- ৩১ জানুয়ারি, মাওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দলে সভায় ‘সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করা হয়। এই সভায় সিদ্ধান্ত হয় ২১শে ফেব্রুয়ারি (৮ই ফাল্গুন) রোজ বৃহস্পতিবার ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ করা হবে।
- ১৪ ফেব্রুয়ারী, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবীতে বঙ্গবন্ধু কারাগারে অনশন শুরু করেন।
- ২০ ফেব্রুয়ারি, নুরুল আমিন সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেন।
- ২১ ফেব্রুয়ারী, রাষ্ট্র ভাষার দাবীতে আন্দোলনরত সালাম, রফিক, বরকত আরও অনেকে নিহত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু জেল থেকে তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে বিবৃতি প্রদান করেন এবং টানা তিনদিন তা অব্যাহত রাখেন।
- ২৭ ফেব্রুয়ারি, টানা অনশনে অসুস্থ বঙ্গবন্ধুকে স্বাস্থ্যগত কারণে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
১৯৫৩
- ১৬ নভেম্বর, প্রাদেশিক আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু দলের ‘সাধারণ সম্পাদক’ হিসেবে নির্বাচিত হন।
- ৪ ডিসেম্বর, আওয়ামী মুসলিম লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, নেজাম-ই-ইসলামি, বামপন্থী গণতান্ত্রিকদল, খিলাফতে রব্বানী পার্টি মোট ৫টি বিরোধীদল মিলে ‘যুক্তফ্রন্ট’ গঠন করে।
১৯৫৪
- ৮-১২ মার্চ, প্রাদেশিক সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ৩০৯টি আসনের মধ্যে ২২৩টি আসন জয়ী হয়ে বিজয়ী হয়। বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জ আসন থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হন।
- ৪ এপ্রিল, যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা গঠন করে, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আর শেখ মুজিব কৃষি, সমবায়, পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
- ৯ মে, পাকিস্তানের গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
- ১৪ মে, বঙ্গবন্ধু বয়ঃকনিষ্ঠ হিসেবে মন্ত্রীসভায় শপদ গ্রহণ করেন।
- ৩০ মে, পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ ফজলুল হক মন্ত্রীসভা ভেঙ্গে দেন। হক মন্ত্রীসভার স্থায়ী ছিল মাত্র ৫৬ দিন। এইদিনই বঙ্গবন্ধু করাচী থেকে ঢাকায় আসা মাত্রই গ্রেফতার হন।
- ২৩ নভেম্বর, বঙ্গবন্ধু জামিনে মুক্তি পেলে জেলগেটেই তাকে নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়।
- বছরের শেষ দিকে বঙ্গবন্ধু জেল থেকে মুক্তি পান।
১৯৫৫
- ৫ জুন, বঙ্গবন্ধু গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
- ১৭ জুন, পল্টনে আওয়ামীলীগের উদ্যোগে জনসভায় বঙ্গবন্ধু প্রথম পূর্ববঙ্গের স্বায়ত্তশাসনের দাবী করেন।
- ২১ অক্টোবর, আওয়ামী মুসলিম লীগের বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশনে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘আওয়ামী লীগ’ করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৫৬
- ১৬ ফেব্রুয়ারি, বাংলা ও উর্দু উভয় ভাষাই রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গণপরিষদে কার্যকর হয়।
- পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচিত হয়, পাকিস্তান ইসলামী প্রজাতন্ত্র নাম ধারণ করে, তখন পূর্ব বঙ্গের নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি হন ‘ইস্কান্দর মির্জা’।
- ১৬ সেপ্টেম্বর, বঙ্গবন্ধু কোয়ালিশন সরকারের ‘শিল্প, বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও ভিলেজ এইড’ মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৫৭
- ৭ ফেব্রুয়ারী, আওয়ামী লীগের তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধুর মুখ্যম ভুমিকায় টাঙ্গাইল জেলার সন্তোষে এক ঐতিহাসিক জনসভার আয়োজন করে যা ‘কাগমারী সম্মেলন’ নামে পরিচিত। সম্মলনে সভাপতিত্ব করেন ‘মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী’। এ সম্মেলনেই ভাসানী পাকিস্থানের পশ্চিমা শাসকদের ‘ওয়ালাকুমুসসালাম’ সম্বোধন করে বাংলাদেশের বিচ্ছিন্নতার ঐতিহাসিক ধ্বনি উচ্চারণ করেন।
- ৩০ মে, দলকে সুসঙ্গটিত করার লক্ষে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন।
- ২৪ জুন - ১৩ জুলাই, সরকারিভাবে বঙ্গবন্ধু চীন সফর করেন।
১৯৫৮
- ৭ অক্টোবর, জাতীয় সংসদে অধিবেশনে ডেপুটি স্পিকার শাহেদ আলীর উপর আক্রমণ হয়, পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হওয়ায় প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা প্রথমবারের মত সামরিক শাসন জারি করেন।
- ১১ অক্টোবর, বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
- ২৭ অক্টোবর, আইয়ুব খান পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করে নেয়।
১৯৫৯
- বঙ্গবন্ধুকে একের পর এক মিথ্যা মামলায় বারবার গ্রেফতার হন।
১৯৬০
- ৭ই ডিসেম্বর, হাইকোর্টে রিট করে বঙ্গবন্ধু মুক্তি লাভ করেন।
- গোপনে কতিপয় ছাত্রদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ নামে একটি গোপন সংগঠন করেন। প্রতি মহকুমায় এবং থানায় ‘নিউক্লিয়াস’ গঠন করেন।
- ২৩ মার্চ, আইয়ুব খান সামরিক শাসন প্রত্যাহার করে নেন।
১৯৬২
- পাকিস্তানের দ্বিতীয় শাসনতন্ত্র রচিত হয়, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
- ৬ ফেব্রুয়ারী, বঙ্গবন্ধুকে জন নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়।
- ২ জুন, ৪ বছরের সামরিক শাসনের অবসান ঘটে।
- ১৮ জুন, শেখ মুজিব মুক্তি লাভ করেন।
- ২৫ জুন, বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন।
- ১৭ সেপ্টেম্বর, শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে (শিক্ষা আন্দোলন) নিহত হন বাবুল, ওয়াজিউল্লাহ, মুস্তাফা প্রমুখ।
- ২৪ সেপ্টেম্বর, বঙ্গবন্ধু লাহোর যান, সোহারাওয়ার্দীর নেতৃত্বে বিরোধীদলীয় মোর্চা ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট’ গঠন করেন।
১৯৬৩
- সোহারাওয়ার্দী অসুস্থ অবস্থায় লন্ডন থাকা কালে বঙ্গবন্ধু তাঁর সাথে পরামর্শের জন্য সেখানে যান। উল্লেখ্য, সোহারাওয়ার্দী ৫ ডিসেম্বর বৈরুতে ইন্তেকাল করেন।
১৯৬৪
- ২৫ জানুয়ারি, এক বৈঠক বঙ্গবন্ধু আওয়ামীলীগকে পুনরুজ্জীবিত করেন।
- ৫-১১ মার্চ, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ‘সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ’ এবং ‘দাঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি’ গঠিত হয়।
- ২৬শে জুলাই, বঙ্গবন্ধুর মুখ্য ভূমিকায় ‘সম্মিলিত বিরোধী জোট কপ (Combined opposition party)’ গঠন করেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কপ-এর পক্ষ থেকে ফাতিমা জিন্নাহকে প্রার্থী দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারনা চালান।
- রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও আপত্তিকর বক্তব্য প্রদানের অভিযোগে নির্বাচনের ১৪ দিন আগে বঙ্গবন্ধুকে ১ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়।
১৯৬৫
- ২ জানুয়ারি, আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্রের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
- বছরের শেষদিকে হাইকোর্টের নির্দেশে বঙ্গবন্ধু মুক্তি লাভ করেন।
১৯৬৬
- ৫ ফেব্রুয়ারী, লাহোরে বিরোধীদলের জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ‘ছয় দফা দাবি’ পেশ করেন। এই ৬ দফা দাবি ‘বাঙালীর মুক্তির সনদ’ যাকে ‘ম্যাগনাকার্টা’ এর সাথে তুলনা করা হয়। ছয় দফার প্রথম দাবি ছিল পূর্ববাংলার স্বায়ত্তশাসন।
- ১ মার্চ, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের ‘সভাপতি’ নির্বাচিত হন.
- ১৮ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু ৬ দফার পক্ষে জনমত সৃষ্টির জন্য সারা দেশে জনসংযোগ করেন, এ সময়ে তিনি তিনমাসে আটবার গ্রেফতার হন।
- ৭ জুন, বঙ্গবন্ধুসহ আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে সারাদেশে ১১ জন শ্রমিক নিহত হন।
১৯৬৮
- ৩ জানুয়ারি, পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামি করে মোট ৩৫ জন বাঙ্গালি সেনা ও সিএসপি অফিসারদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী করে ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ দায়ের করে। এ মামলার শিরোনাম ছিল ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য’।
- ১৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে পুনরায় জেলগেট থেকে ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায়’ গ্রেফতার দেখিয়ে ঢাকা সেনানিবাসে আটক রাখা হয়।
- ১৯ জুন, ঢাকা সেনানিবাসে কঠোর নিরাপত্তায় এই মামলার আসামিদের পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি এস এ রহমানের নেতৃত্বে বিচারকার্য শুরু করা হয়।
- ২৯ ডিসেম্বর, ছাত্র আন্দোলন অসন্তোষ গণআন্দোলনে রূপান্তরিত হয় মাওলানা ভাসানীর ‘ঘেরাও আন্দোলন’ কর্মসূচির মাধ্যমে।
১৯৬৯
- ৪ জানুয়ারী, ছাত্রলীগ, ছাত্র ফেডারেশন ও ছাত্র ইউনিয়ন মিলে সর্বদলীয় ‘ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে।
- ৫ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধুর ৬ দফাসহ আরও ১১ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ‘কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ কর্মসূচী ঘোষণা করে।
- ২০ জানুয়ারী, ছাত্রনেতা আসাদ নিহত হন। এজন্য প্রতিবছর এই দিনে ‘আসাদ দিবস’ পালিত হয়।
- ২৪ জানুয়ারী, ছাত্রনেতা মতিউর রহমান নিহত হন।
- ১ ফেব্রুয়ারী, বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দান করা হয়, তিনি এই মুক্তিদানকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।
- ১৫ ফেব্রুয়ারি, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী ‘সার্জেন্ট জহুরুল হক’ কে গুলি করে হত্যা করা হয়।
- ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুজ্জোহাকে হত্যা করা হয়।
- ২২ ফেব্রুয়ারি, উপরিউক্ত ব্যক্তিবর্গের নিহতের ঘটনায় তীব্র গণআন্দোলনের মুখে সরকার ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য’ মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয় এবং শেখ মুজিবসহ সকল আসামীরা মুক্তি পান।
- ২৩ ফেব্রুয়ারি, রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে এক সংবর্ধনার আয়োজন করে, ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
- ১০ মার্চ, রাওয়ালপিণ্ডীতে আইয়ুব খানের সাথে ৬ দফা ও ছাত্রদের ১১ দফার প্রেক্ষিতে ‘গণঅসন্তোষ নিরসনে স্বায়ত্তশাসন’ দাবি করেন, শাসকগোষ্টি বঙ্গবন্ধুর দাবি অগ্রাহ্য করলে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন।
- ২৫ মার্চ, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। ইয়াহিয়া খান দ্বিতীয়বারের মত সামরিক শাসন জারি করেন।
- ৫ ডিসেম্বর, শহিদ সোহরাওয়ার্দী মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আওয়ামীলীগের আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু পূর্ব বাংলার নাম প্রথমবারের মতো উচ্চারণ করেন ‘বাংলাদেশ’।
১৯৭০
- ১ জানুয়ারি, সকল ধরনের রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
- ৬ জানুয়ারি, তিনি পুনরায় আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
- ৭ জুন, রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৬ দফার প্রশ্নে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু দেশবাসীকে আহ্বান জানান।
- ১৭ অক্টোবর, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে বঙ্গবন্ধু ‘নৌকা’ প্রতীক পছন্দ করেন।
- ১২ নভেম্বর, উপকূলীয় এলাকায় ১০ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটলে বঙ্গবন্ধু নির্বাচনী প্রচারণা বাদ দিয়ে বন্যা দুর্গত এলাকায় পাকিস্তানী শাসকদের ঔদাসীন্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
- ৭ ডিসেম্বর, ‘জাতীয় পরিষদের’ সাধারণ নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৬০টি ও সংরক্ষিত ১৩টি আসনের মধ্যে ৭টি আসনসহ মোট ১৬৭টি আসনে জয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন।
লীগ পশ্চিম পাকিস্তানের ১৪৪টি আসনের মধ্যে কোন আসন লাভ করেনি
- ১৭ ডিসেম্বর, প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৮৮টি ও সংরক্ষিত ১০টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনসহ মোট ২৯৮ টি আসনে বিজয়ী হয়।
১৯৭১
- ৩ জানুয়ারি, রেসকোর্সের জনসভায় আওয়ামী লীগের সকল বিজয়ী পার্থীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু ৬ দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র রচনা ও জনগণের প্রতি আনুগত্য থাকার শপথ গ্রহণ করেন। এই অনুষ্ঠান শুরু করা হয় ‘আমার সোনার বাংলা’ রবীন্দ্র সংগীত ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান দিয়ে।
- ১০ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধু, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে তিন দফা বৈঠক করেন।
- ২৭ জানুয়ারি, জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে বৈঠক করেন, কিন্তু তিন দিন আলোচনার পরও এই বৈঠক ব্যর্থ হয়।
- ১৩ ফেব্রুয়ারি, ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের বৈঠক আহ্বান করেন।
- ১৫ ফেব্রুয়ারি, ভুট্টো খান দুই প্রদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রতি ক্ষমতা হস্তান্তর করার দাবি করেন।
- ১৬ ফেব্রুয়ারি, বঙ্গবন্ধু এই দাবিকে অযৌক্তিক বলে বিবৃতি দেন।
- ১ মার্চ, আকস্মিকভাবে ইয়াহিয়া খান অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় পরিষদের বৈঠক স্থগিত করলে সারা বাংলাদেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। বঙ্গবন্ধু এটাকে চক্রান্ত বলে উল্লেখ করে সারাদেশে অসহযোগ আন্দলনের ডাক দেন।
- ২ মার্চ, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে নুরে আলম সিদ্দিকী ও শাহাজাহান শিরাজ এবং ডাকসুর ভিপি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আ. স. ম. আব্দুর রব ও আব্দুল কুদ্দুস মাখন এই চার নেতা মিলে ‘স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করে। ঐ দিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে আ. স. ম. আব্দুর রব সর্বপ্রথম মানচিত্র খচিত বাংলাদেশের পতাকা উত্তলন করেন। এজন্য ২ই মার্চ ‘জাতীয় পতাকা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
- ৩ মার্চ, বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সারাদেশে হরতাল পালিত হয়। রেসকোর্সে ‘স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ কতৃক স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করা হয়। এই ইশতেহারে বঙ্গবন্ধুকে শেখ মুজিবকে ‘জাতির পিতা’ এবং ‘আমার সোনার বাংলা’ রবীন্দ্রসংগীতকে জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
- ৭ মার্চ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে এক বিশাল জনসভায় ঐতিহাসিক ১৯
মিনিটের, ১১০৮ টি শব্দের ভাষণে ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার
সংগ্রাম’। তিনি আরও
বলেন,
‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দিব। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ’ বলে এই দিনই বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা আনফিশিয়ালি ঘোষণা করে দেন, এবং এই দিন থেকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পুরো দেশ চলতে থাকে।উল্লেখ্য যে, ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালীর মুক্তির সনদ এবং এর বিষয়বস্তু ছিল চারটি। এই ভাষণটি বিশ্বে ১২টি ভাষায় অনূদিত হয়। ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তে ইউনেস্কো ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ স্বীকৃতি প্রদান করে, এটিই ইউনেস্কো’র এ যাবৎ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ৪২৭টি প্রামাণ্য ঐতিহ্যের মধ্যে প্রথম ‘অলিখিত’ ভাষণ।
- ১৬ মার্চ, ঢাকায় ক্ষমতা হস্তান্তর প্রশ্নে মুজিব ও ইয়াহিয়া বৈঠক শুরু হয়। আলোচনার জন্য ভুট্টোও ঢাকায় আসেন এবং এই বৈঠক চলে ২৪শে মার্চ পর্যন্ত।
- ১৯ মার্চ, দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের (গাজীপুরের জয়দেবপুরে) সৈন্যদের অস্ত্র জমা দেওয়ার আদেশ দিলে এর প্রতিবাদে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে।
- ২৩ মার্চ, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ‘প্রতিরোধ দিবস’ পালন করেন এবং সমস্থ সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
- ২৫ মার্চ, আলোচনা ব্যর্থ হবার পর ইয়াহিয়া রাষ্ট্রপতির গাড়ি ব্যবহার না করে অন্য গাড়িতে চড়ে ঢাকা বিমানবন্দরে যেয়ে দেশ ত্যাগ করেন। মধ্যরাতে পাকিস্তানি সেনারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা সদর দফতর, রাজারবাগ পুলিশ হেড কোয়ার্টারসহ সারাদেশে আক্রমণ করে নিরস্ত্র নিরীহ বাঙালিদের গণহত্যা করে। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ পত্রিকার সাংবাদিক ‘সাইমন ড্রিং’ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই গণহত্যার রিপোর্ট করে বিশ্ববাসীকে অবগত করেন।
- গণহত্যার খবর পেয়ে বঙ্গবন্ধু ১২.২০মিনিটে ইংরেজী এবং বাংলায় এক তারবার্তায় স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই বার্তা চট্টগ্রামসহ সারাদেশে প্রেরণ করেন। এই ঘোষণাকে স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা ধরে নিয়ে ১৯৮০ সালের ২৬শে মার্চ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১.৩০মিনিটে বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়।
- ২৬ মার্চ,প্রথম প্রহরে ইয়াহিয়া খান এক বেতার ভাষণে বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী বলে আখ্যায়িত করেন। দুপুরে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হান্নান বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাকে অবলম্বন করে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।
- ২৭ মার্চ, অপরাহ্নে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র হতে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘মেজর জিয়াউর রহমান’ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আবারও স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। এইদিনই বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা থেকে করাচি নিয়ে যান সেই সাথে সমস্থ বাঙ্গালী সেনা, সৈন্য ও সাধারণ জনতা এক হয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নেমে পড়ে অস্ত্র হাতে মহান ‘মুক্তির সংগ্রামে’।
- ১০ এপ্রিল, নির্বাচিত সাংসদগণ আগরতলায় একত্রিত হয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’ নামে অস্থায়ী সরকার গঠন করেন। এই দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা আদেশ’ জারি করা হয়, এবং এটি কার্যকর ধরা হয় ২৬শে মার্চ ১৯৭১ সাল থেকে। কর্নেল এম এ জি ওসমানী কে ‘প্রধান সেনাপতি’, কর্নেল এম এ রবকে ‘চিফ অফ স্টাফ (সেনাবাহিনীর প্রধান)’ এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারকে ‘বিমান বাহিনীর প্রধান ও উপসেনাপ্রধান’ করে মুক্তিযুদ্ধের সেনাবাহিনী ‘মুক্তিফৌজ’ গঠন করা হয়। এইদিনে মেজর জিয়াউর রহমান, মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর কে এম সফিউল্লাহ, মেজর আবু ওসমানকে অধিনায়ক করে যথাক্রমে চট্টগ্রাম অঞ্চল, কুমিল্লা অঞ্চল, সিলেট অঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বিভক্ত করে চারটি যুদ্ধ অঞ্চলের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।
- ১৭ এপ্রিল, তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরের মহকুমার ভবেরপাড়া গ্রামের বৈদ্যনাথতলায় বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। দেশ-বিদেশের শতাধিক সাংবাদিক ও হাজার হাজার দেশবাসীর উপস্থিতিতে শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ‘জনাব আব্দুল মান্নান’। অস্থায়ী সরকারের সচিবালয় স্থাপিত হয় কলকাতার ৮ নং থিয়েটার রোডে (বর্তমান শেক্সপিয়ার সারণি)। এজন্য এ সরকার ‘মুজিবনগর সরকার’, ‘অস্থায়ী সরকার’, ‘প্রবাসী সরকার’ ও ‘অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার’ নামেও পরিচিত। এজন্য ১৭ই এপ্রিলকে ‘মুজিব নগর দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। উল্লেখ্য, এইদিনে ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতার ঘোষণা আদেশ’ পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী।
এক নজরে মুজিবনগর সরকার-
- রাষ্ট্রপতি – শেখ মুজিবুর রহমান (শপথ গ্রহণে অনুপস্থিত)
- উপ-রাষ্ট্রপতি – সৈয়দ নজরুল ইসলাম
- প্রধানমন্ত্রী – তাজউদ্দীন আহমেদ
- অর্থ, বাণিজ্য এবং শিল্প, পরিবহন মন্ত্রী – ক্যাপ্টেন এম মুনসুর আলী
- পররাষ্ট্র, আইন, এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী – খন্দকার মোশতাক
- স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন, কৃষি মন্ত্রী – এ এইচ এম কামরুজ্জামান
- এপ্রিল মাসেই মার্কিন সাপ্তাহিক ‘নিউজউইক’ এর সাংবাদিক ‘লোবেন জেঙ্কিস’ তার প্রতিবেদনে বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজনীতির কবি (Poet of politics)’ বলে আখ্যায়িত করেন।
- ৭ জুলাই, সম্মুখ সমরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার জন্য প্রধান সেনাপতি জিয়াউর রহমানকে অধিনায়ক করে ব্রিগেড ফোর্স ‘জেড ফোর্স’ গঠন করা হয়।
- ১০ জুলাই, মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তরে অধিনায়কদের নিয়ে সম্মেলন করা হয়, এ সম্মেলনে বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে এবং ৬৪টি সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি সেক্টরকে একজন সেক্টর কমান্ডারের উপর ন্যাস্ত করা হয়।
- জুলাই মাসে ‘পদ্মা ও পলাশ’ নামের ছোট টহল গানবোর্ট নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠিত হয়। যুদ্ধের সময় নৌবাহিনী পরিচালিত অভিযানের নাম ছিল ‘অপারেশন জ্যাকপট’।
- সেপ্টেম্বর মাসে আরেকটি ব্রিগেড ফোর্স কে এম শফিউল্লাহকে অধিনায়ক করে ‘এস ফোর্স’ গঠন করা হয়।
- ৭ সেপ্টেম্বর, পাকিস্তানের ফায়জালাবাদ (লায়ালপুর) জেলে বঙ্গবন্ধুর গোপন বিচার করে তাঁকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়।
- ২৮ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়, গোপনীয়তা রক্ষার্থে এ বাহিনীর গুপ্ত নাম হয় ‘কিটোফ্লাইট’।
- ১৪ অক্টোবর, খালেদ মোশাররফকে অধিনায়ক করে ‘কে ফোর্স’ গঠন করা হয়।
- ২১ নভেম্বর, বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথ কমান্ড গঠন করে। এজন্য এই দিনে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
- ২ ডিসেম্বর, ইয়াহিয়া বঙ্গবন্ধুকে সমঝোতার প্রস্তাব দেন। বঙ্গবন্ধু তা প্রত্যাখান করেন।
- ৩ ডিসেম্বর, পাকিস্তান বিমান বাহিনী ভারতীয় বিমান ঘাটিতে আক্রমণ করলে ভারত, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
- ৬ ডিসেম্বর, ভারত বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
- ৭ ডিসেম্বর, দুই বাহিনী যশোর সেনানিবাস দখল করে নেয়। আর ভুটান ২য় দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
- ৯ ডিসেম্বর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং নোয়াখালী শহর মিত্রবাহিনীর দখলে চলে আসে।
- ১৪ ডিসেম্বর, বাঙ্গালী তৎকালীন শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে এজন্য ১৪ই ডিসেম্বর ‘বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
- ১৬ ডিসেম্বর, রোজ বৃহস্পতিবার পাক হানাদার বাহিনীর ইস্টার্ন বাহিনীর অধিনায়ক ‘লে. জেনারেল আমির আব্দুল্লাহখান নিয়াজী’ ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে ঢাকার রেসকোর্সে ময়দানে বাংলাদেশ ও ভারত সম্মিলিত বাহিনী মিত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান ‘লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার’ নিকট আত্মসমর্পণ করেন। এজন্য ১৬ ই ডিসেম্বর ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন ‘গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ. কে. খন্দকার’।
- ২২ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ সরকার ভারত থেকে বাংলাদেশে আসে এবং রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা দখল করে।
- ২৭ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়।
- ৮ জানুয়ারি, পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক চাপে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেয়। সেদিনই তাঁকে ঢাকার উদ্দেশ্যে লন্ডন পাঠানো হয়।
- ৯ জানুয়ারি, লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের সাথে সাক্ষাত হয়।
- ১০ জানুয়ারি, পূর্বাহ্ণে তিনি লন্ডন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে আসার পথে দিল্লীতে যাত্রাবিরতি নেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি ‘ভি ভি গিরি’ ও প্রধানমন্ত্রী ‘ইন্দিরা গান্ধী’ বিমানবন্ধরে বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানান। অপরাহ্ণে বঙ্গবন্ধু ঢাকা এসে পৌছান। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি রেসকোর্সে ময়দানে লক্ষ জনতার সমাবেশে অশ্রুসিক্ত নয়নে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। এজন্যে এই দিনে ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
- ১১ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ‘অস্থায়ী সংবিধান আদেশ’ জারি করেন। রাষ্ট্রপতি শাসনের পরিবর্তে ‘সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা’ প্রবর্তন করেন।
- ১২ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতির পদ পদত্যাগ করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তাজউদ্দীন আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর পদ পদত্যাগ করে অর্থমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
- ৬ ফেব্রুয়ারি, ভারত সরকারের আমন্ত্রণে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে তিনি ভারত যান।
- ১২ মার্চ, বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে ভারতীয় মিত্রবাহিনী বাংলাদেশ ত্যাগ করে।
- ২৩ মার্চ, বঙ্গবন্ধু ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ’ নামে একটি আদেশ জারি করেন, এই আদেশ বলে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচিত সদস্যগণ, গণপরিষদের সদস্য বলে পরিগণিত হন।
- ১০ এপ্রিল, গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন বসে, পরিষদের নেতা ছিলেন বনবন্ধু, স্পীকার - শাহ্ আব্দুল হামিদ, ডেপুটি স্পীকার – মুহাম্মদউল্লাহ। সংবিধানের প্রণয়ন কমিটি গঠন করার মুখ্য উদ্দেশ্যে এই অধিবেশন ডাকা হয়। ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে গণপরিষদের মোট ৩৪ জন সদস্য নিয়ে ‘খসড়া সংবিধান প্রণয়ন’ কমিটি গঠন করা হয়।
- ১০ অক্টোবর, বিশ্বশান্তি পরিষদ বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরী শান্তি পদক’-এ ভূষিত করে।
- ১২ অক্টোবর, খসড়া সংবিধান বিল আকারে গণপরিষদে উত্থাপন করা হয়।
- ৪ নভেম্বর, গণপরিষদে সংবিধান গৃহীত হয়। এজন্য ৪ নভেম্বরকে ‘সংবিধান দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। বঙ্গবন্ধু প্রথম সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন।
- ১৪ ডিসেম্বর, বঙ্গবন্ধু সংবিধানে স্বাক্ষর প্রদান করেন।
- ১৬ ডিসেম্বর, সকলের স্বাক্ষরে সংবিধান কার্যকর বা প্রবর্তন হয় এবং গণপরিষদ বাতিল হয়ে যায়।
- ৭ মার্চ, নতুন সংবিধানের আওতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনে মধ্যে ২৯৩টি আসন লাভ করে।
- ৩ সেপ্টেম্বর, আওয়ামী লীগ, সিপিবি ও ন্যাপের সমন্বয়ে ‘ঐক্যফ্রন্ট’ গঠন করেন।
- ২২ ফেব্রুয়ারি, পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ওআইসির সদস্যপদ লাভ করে।
- ১৭ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে ।
- ২৫ সেপ্টেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু প্রথমবারের মত বাংলায় ভাষণ দেয়।
- ২৫ জানুয়ারি, ৪র্থ সংশোধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা ও বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
- ২৪ ফেব্রুয়ারি, দেশের সকল রাজনৈতিক দল সমন্বয়ে জাতীয় দল ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল)’ গঠন করেন।
- ১৫ অগাস্ট, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্রে কতিপয় সেনাবাহিনীর বিশ্বাসঘাতক সেনা অফিসাররা বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের ১৬ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এজন্য এইদিনকে ‘জাতীয় শোক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।
- এইদিনই খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত হন।
- উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধুর চিহ্নিত খুনিরা হলেন- কর্নেল (তৎকালীন মেজর) ফারুক রহমান, খন্দকার আব্দুর রসীদ, শরীফুল হক ডালিম, মহিউদ্দিন আহমেদ, বজলুল হুদা, নূর চৌধুরী প্রমুখ। এইসময়ে সেনাপ্রধান ছিলেন ‘কে এম শফিউল্লাহ’।
- ২৫ অগাস্ট, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।
- ২৬ সেপ্টেম্বর, খন্দকার মোশতাক ‘ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ, ১৯৭৫’ নামে একটি আদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করা যাবে না বলে হত্যাকারীদের রক্ষা করেন।
- ৩ নভেম্বর, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের কমান্ডে সেনা অভ্যুথ্থানে মেজর জিয়াকে গৃহবন্ধী করে।
- ৪ নভেম্বর, জেলের ভিতর জাতীয় চার নেতা যথাক্রমে তাজউদ্দীন, সৈয়দ নাজরুল ইসলাম, মুনসুর আলী ও কামরুজ্জামানকে মোশতাকের অনুগত বাহিনী হত্যা করে। এজন্য এইদিনে ‘জেল হত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
- ৫ নভেম্বর, খালেদ মোশাররফ, মোশতাককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন এবং আবু সায়েমকে রাষ্ট্রপতি পদে শপথ গ্রহণ করান নিজে সেনাপ্রধান হন।
- ৭ নভেম্বর, কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে সিপাহী সেনা জাসদ কর্মীরা মিলে আরেকটি পাল্টা অভ্যুথ্থানে খালেদ মোশররফ তার সহযোগীরা নিহত হন, এজন্য এই বিপ্লব ‘সিপাহী বিপ্লব’ নামে পরিচিত। ওদিকে জিয়ার অনুগত অফিসাররা জিয়াকে মুক্ত করে জিয়াকে সেনাপ্রধান ঘোষণা করে।
- ২৪ নভেম্বর, জিয়া কর্নেল তাহেরকে গ্রেফতার করে একক ক্ষমতায় আসীন হন এবং পরবর্তী রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রকার্য পরিচালনা করেন।
◙ বঙ্গবন্ধুর লিখিত গ্রন্থসমুহঃ
►
অসমাপ্ত আত্মজীবনী (জুন, ২০১২ সাল)-- আত্মজীবনীমূলক
গ্রন্থ, প্রকাশ করেছে দ্যা ইউনিভার্সিটি প্রেস লি.। গ্রন্থটি যথাক্রমে ইংরেজি (ড. ফকরুল আলম), জাপানি (কাজুহিরো
ওয়াতানাবে), চৈনিক (চাই শি), আরবি (মোহাম্মদ দিবাজাহ, ফিলিস্তিন), ফরাসি (ফ্রান্স
ভট্টাচার্য), হিন্দি (প্রেম কাপুর), স্প্যানিশ (বেঞ্জামিন ক্লার্ক), তুর্কি (আতাতুর্ক
সংস্কৃতি ও গবেষণা সংস্থা্)ও অসমীয়া (সৌমেন ভারতীয়া ও জুরি শর্মা)ভাষা নিয়ে এ পর্যন্ত মোট নয়টি ভাষায় অনূদিত হয়। এই
বইটিতে তিনি শৈশব থেকে ১৯৫৫ সাল অবধি তার জীবনের সাথে রাজনৈতিক গঠনাবলি উল্লেখ
করেছেন। ১৯৬৬-৬৯ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্ত্ররীণ অবস্থায় বইটি রচনা করেন।
►
কারাগারে রোজনামচা ( ১৭ই মার্চ, ২০১৭)—নামকরণ
করেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ রেহেনা। এই বইয়ে ১৯৬৬-৬৮ সালের কারাস্মৃতি তুলে ধরেছেন,
বইটি প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমী।
►
নয়া চীন ভ্রমণ (২০২০) --- ১৯৫২-৫৭ সালের চীন সফরের উপর
যে ডায়রি লিখেছেন তাই গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হবে। বইটি প্রকাশ করবে বাংলা
একাডেমী।
►
আমার কিছু কথা—মুক্তিযুদ্ধের উপর লিখিত
বঙ্গবন্ধুর গ্রন্থ।
◙ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গ্রন্থসমুহঃ
►
৩০৫৩ দিন—১৯৬৬-৬৮ সালের কারাজীবনের দুর্লভ ছবি ও তথ্য নিয়ে বইটি রচিত।
►
গোয়েন্দা নথির বঙ্গবন্ধু-- পাকিস্তানের গোয়েন্দা নথিতে বঙ্গবন্ধুকে প্রতিবেদনের সংকলন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন